আজকের শিশু কিশোর তরুণেরাই ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির কর্নধার। এদের গভীরে লুকিয়ে রয়েছে অশেষ সম্ভাবনা বিপুল সৃজনী প্রতিভা, কোমলমতি শিক্ষার্থীর অভ্যন্তরে মেধার সুষ্ঠ বিকাশ ও তার বহুমুখী সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনের জন্য যথোপযুক্ত মাধ্যম প্রয়োজন। “আলহাজ্ব আতিকুর রহমান ভূঞা একাডেমি” এই অভাব অনেকাংশে পূরণ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং সকল ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগের প্রযুক্তি মানুষের জীবন ধারনের পদ্ধতিকে বদলে দিয়েছে- জীবনকে করেছে সহজ ও আনন্দময়। শিক্ষা ক্ষেত্রও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি যোগ করেছে নতুন মাত্রা।
আধুনিক প্রতিযোগিতা মৃলক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে দক্ষ ও কার্যকর মানব সম্পদের বিকল্প নেই। শুধুমাত্র শহর পর্যায়ে উন্নত ও অধুনিক মান-সম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলে জাতীয় পর্যায়ে মেধা সংগ্রহ সম্ভব নয়। এই উপলব্দি থেকে আমার প্রয়াত পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে “আলহাজ্ব আতিকুর রহমান ভূঞা একাডেমি” স্থাপন করা হয়েছিল। আমাদের শিক্ষক/শিক্ষিকাগন এলাকার সন্তানদের সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মহান দায়িত্ব পালনে নিজের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা উৎসর্গ করবেন এটাই আমার প্রত্যাশা। তাদের ফলপ্রসৃ শিক্ষাদান ও আত্নত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হবে শিক্ষার মহান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
পরিশেষে আমাদের শিক্ষক মন্ডলী, কর্মচারী ও প্রানপ্রিয় শিক্ষার্থীদের সু- স্বাস্থ্য , দীর্ঘায়ু, আন্তরিক স্তভেচ্ছা ও মঙ্গল কামনা করছি ।
তথ্য ও যোগাযোগের প্রযুক্তি (Information and communication- ICT) শিক্ষা ক্ষেত্রে যোগ করেছে এক নতুন মাত্রা। আইসিটি স্থান করে নিয়েছে গ্রামের বিদ্যালয়ের সেই ছোট্ট শ্রেনীকক্ষেও, যেখানে ছাত্র/ছাত্রীরা বই খাতার পাশাপাশি কম্পিউটার শিখতে শুরু করেছে। আধুনিক জ্ঞান- বিজ্ঞান এবং সকল ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি www ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে স্মার্ট বাংলাদেশের যোগ্য রূপকার হিসাবে গড়ে তুলতে এই ওয়েব সাইট অত্যান্ত www সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এই ওয়েব সাইটটি খোলার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক মান উন্নয়ন ও তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করনে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত হবে এই প্রত্যাশা করছি।
শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। কাজেই সবার জন্য শিক্ষা অর্জন করা মানুষের মৌলিক অধিকার। এ অধিকারকে যথাযথভাবে বাস্তাবায়নের মাধ্যমে বিশ্বের অনেক দেশ আজ উন্নত দেশ হিসাবে উন্নতির চরম শিখরে আরোহন করেছে। এক্ষেত্রে আমাদের দেশ কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছে। যুগের সাথে সংগতিপৃর্ন বিকাশের জন্য আমরা প্রত্যেকেই ভাবি নিজ নিজ সন্তানদের নিয়ে। প্রকৃতির সন্তান মানব শিশুকে পরিশ্তদ্ধ হতে হয়, পরিপৃর্ন হতে হয় স্বীয় সাধনায়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষাই হলো আমাদের মৃলমন্ত্র। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি শিক্ষার মৌলিক উদ্দেশ্য হলো আচরনের কাঙ্খিত পরিবর্তন। এ লক্ষ্যে তাদেরকে সৃজনশীল, স্বাধীন, সক্রিয় এবং দায়িত্বশীল সু-নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলা। এজন্য প্রয়োজন যোগ্য শিক্ষক মন্ডলী এবং উপযুক্ত শিক্ষাদান পদ্ধতির সমন্বয়ে একটি শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ। আমি বিনয়ের সাথে দাবী করি “ আলহাজ্ব আতিকুর রহমান ভূঞা একাডেমিতে ” এসব কিছুর সমম্বয় ঘঠানো সম্ভব হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মজ্জাগত প্রতিভা সহজে বিকাশের জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, আনুষ্ঠানিক খেলাধুলা সহ গঠনমূলক নানাবিধ শিক্ষা কার্যক্রম যা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আরোও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে ।
শিক্ষা একটি চলমান প্রক্রিয়া। শিক্ষা মানুষের আচরনের স্থায়ী পরিবর্তন ঘটায়। এই পরিবর্তনে অত্র বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীকে যুগোপযোগী ও সক্ষম শিক্ষা প্রদান করে আসছে। আমি বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন কালীন এই মহান কার্যক্রমে অংশ গ্রহন করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। পাশাপাশি এলাকার সচেতন শিক্ষানুরাগী ব্যাক্তিবর্গ সহ সম্মানিত অভিভাবকগনের সুচিন্তিত মতামত ও পরামর্শ বিনীতভাবে কামনা করছি। পরিশেষে সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা আমাদের সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীরা যেন সত্যিকার জ্ঞান
অর্জনের মাধ্যমে সু-নাগরিক হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং নিজের ও জাতির গৌরব বয়ে আনতে সক্ষম হয়।
নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলাধীন কেন্দুয়া পৌরসভার অর্ন্তগত দক্ষিন প্রান্তে চিরাং রোডে অত্যান্ত সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে সরকারী মডেল মসজিদ সংলগ্ন “আলহাজ্ব আতিকুর রহমান ভূঞা একাডেমি” অবস্থিত। বিদ্যালয়ের চারপাশে রয়েছে পাকা রাস্তা, সবুজ চত্বর, পুষ্পকুঞ্জ এক অপরুপ প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে তুলেছে যা ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতির ক্ষেত্রে আকর্ষণ সৃষ্টি করে।
কেন্দুয়া পৌরসভা সংলগ্ন ১১নং চিরাং ইউনিয়ন পরিষদ। উক্ত ইউনিয়নের বার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান মরহুম আলহাজ্ব আতিকুর রহমান ভূঞা একজন সুপরিচিত সমাজ সেবক, শিক্ষানুরাগী ও আদর্শ ব্যাক্তি ছিলেন। তিনি কেন্দুয়া সরকারী কলেজ , কেন্দুয়া জয়হরী স্প্রাই সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, কেন্দুয়া সাবেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচিত সদস্য ও সভাপতি হিসাবে শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে গেছেন। তিনি কেন্দুয়া পৌরসভা সংলগ্ন বাট্রা গ্রামের একজন কৃতি সন্তান ছিলেন। তিনি জীবদ্দশায় এলাকার সকল মানুষের সার্বিক উন্নয়নকল্পে সচেষ্ট ছিলেন। সমাজের বিভিন্ন স্তরে তার সরব উপস্থিতি ছিলো। তিনি এলাকার কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের কথা চিন্তা করে ১৯৯৩ সনে তার প্রয়াত পিতার নামে নিজ গ্রামে নামধর ভূঞা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি “চিরাং বাজার শাহী জামে মসজিদ” প্রতিষ্ঠা সহ এলাকার বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এলাকার জনসাধারনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরনে এবং পিছিয়ে পরা ছেলে-মেয়েদের কথা চিন্তা করে স্কুল, কলেজ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন। তিনি গত- ১৫.০৩.২০০২ইং তারিখ মৃত্যু বরন করেন।
আদর্শ সুশীল সমাজ গঠন, সুন্দর সমৃদ্ধশালী দেশ গঠনে শিক্ষার বিকল্প নাই। সে রকম শিক্ষার দর্শন, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রয়াত পিতার স্বপ্ন পূরনে তার বড় সন্তান চিরাং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জনাব এডভোকেট মোঃ নাজমুল হক ভূঞা (কচি) নারী শিক্ষার উন্নয়নে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষে গত- ২৬.০৪.২০০২ইং তারিখ কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ হল রুমে এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তি বর্গকে নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দুয়া পৌরসভার মেয়র শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব প্রয়াত জনাব আব্দুল হক ভূঞা। বাট্রা গ্রামের অপর কৃতি সন্তান বিশিষ্ঠ শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব প্রয়াত এডভোকেট আব্দুর রহমান ভূঞা সাহেবের প্রস্তাবে পৌর এলাকার মধ্যে চিরাং রোডে “আলহাজ্ব আতিকুর রহমান ভূঞা গার্লস একাডেমি” নামে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনে সকলেই ঐক্যমত পোষন করেন এবং এডভোকেট মোঃ নাজমুল হক ভূঞা (কচি) সাহেব কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের অনুরোধ জানান। তিনি এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের ঐক্যমতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আশ্বস্থ করেন যে, আপনাদের সকলের সহোযোগীতা পেলে একটি মান সম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য এককভাবে আমাদের পরিবার থেকে প্রয়োজনীয় ভূমি ও অর্থের যোগান দেয়া হবে। এ লক্ষ্যে নয় সদস্য বিশিষ্ঠ একটি সাংগঠনিক ও বাস্তবায়ন কমিটি এবং ভবিষ্যতে ট্রাষ্টের মাধ্যমে পরিচালনার লক্ষে সাত সদস্য বিশিষ্ঠ ভূঞা কল্যান ট্রাষ্ট গঠন করা হয়। অতঃপর ২০০১ সন হইতে আলহাজ্ব আতিকুর রহমান ভূঞা গার্লস একাডেমি নামে বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। মরহুম আলহাজ্ব আতিকুর রহমান ভূঞার উত্তরাধীকারীগণ যথাক্রমে (১) স্ত্রী- আলহাজ্ব আম্বিয়া রহমান ভূঞা (২) ছেলে- এডভোকেট মোঃ নাজমুল হক ভূঞা (কচি) (৩) প্রয়াত মোঃ এনামুল হক ভূঞা (৪) ডাঃ মোঃ আমিনুল হক ভূঞা (৫) মোঃ সাজেদুল হক ভূঞা (৬) মেয়ে- মিমি ফারহানা হক (৭) সাবিয়া হক, কেন্দুয়া পৌরসভাধীন চিরাং রোডে অত্যন্ত মূল্যবান ৫০ শতাংশ ভূমি প্রতিষ্ঠানের নামে রেজিষ্ট্রি দলিল মূলে হস্তান্তর করেন। তাদের সম্পূর্ন নিজস্ব অর্থায়নে সরকারী বিধি-বিধান অনুসরন করে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে এলাকার পিছিয়ে পরা ছেলেদের কথা চিন্তা করে ২০১৪ সনে সহ শিক্ষা চালু করা হয় এবং নামের আংশিক সংশোধনক্রমে “আলহাজ্ব আতিকুর রহমান ভূঞা একাডেমি” নাম করন করা হয়। বিদ্যালয়টি ০১.০১.২০০৪ সনে নিম্ন মাধ্যমিক স্বীকৃতি ও ০১.০১.২০০৬ সনে মাধ্যমিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয় এবং ০১.০৫.২০০৪ সনে জুনিয়র এমপিও ও ২৩.১০.২০১৯ সনে সনে মাধ্যমিক এমপিও ভূক্ত হয়। বর্তমানে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা শাখা চালু রয়েছে।
“আলহাজ্ব আতিকুর রহমান ভূঞা একাডেমি” একটি ঐতিহ্যবাহী সুনামধন্য বেসরকারী মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান। একটি প্রগতিশীল, সমাজ গড়ার লক্ষ্যে আজকের ছেলে- মেয়েদের আগামী দিনের কর্তব্য পরায়ন, দায়িত্বশীল স্মার্ট নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলার জন্য মূল্যবোধ ভিত্তিক উন্নত ও আদর্শ শিক্ষাদান করাই বিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত বিদ্যালয় কতৃপক্ষ